গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক দৈনন্দিন ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল টিটিএন মাল্টিমিডিয়া-তে “কক্সবাজারে নিকাহ্ ও তালাক রেজিস্ট্রার পদে দুর্নীতির অভিযোগ: ঝিলংজা ভুয়া কাজী” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমি, মাওলানা মোহাম্মদ হোসাইন। আমি ঝিলংজা এলাকার সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার, এবং আমার নিয়োগ বিধি মোতাবেক সম্পূর্ণ বৈধ।

প্রকাশিত সংবাদটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর। এতে আমাকে ভুয়া কাজী বলা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে ভুয়া কাজী বলার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। আমি এই সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

প্রকৃত ঘটনা:

নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নিয়োগের প্যানেল কমিটির পাঁচ সদস্যের মধ্যে দুই সদস্য—উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের—স্বাক্ষর জাল করে ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে মন্ত্রণালয়ে ভুয়া প্যানেল পাঠান রমিজ কামাল। বিষয়টি আমি মন্ত্রণালয়ে অবহিত করলে, মন্ত্রণালয় ৮ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের নির্দেশ দেয়। জেলা রেজিস্ট্রারের তদন্তে স্বাক্ষর জালিয়াতির প্রমাণ মেলে।

এই প্রতারণার বিরুদ্ধে আমি ১২৪০৪/২১ নম্বর রিট মামলা দায়ের করি। দীর্ঘ শুনানি শেষে দুই বছর পর, ১২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে, মাননীয় হাইকোর্ট চূড়ান্ত রায়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি প্যানেল বাতিল ঘোষণা করেন এবং নতুন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্যানেল প্রেরণের নির্দেশ দেন।

রমিজ কামাল এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ৩৯৮৮/২৩ নম্বর সিপি মামলা করেন। কিন্তু মাননীয় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ ১৩ মার্চ ২০২৩ তারিখে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। অর্থাৎ, জালিয়াতি প্যানেল বাতিল এবং নতুন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্যানেল গঠনের নির্দেশ বহাল থাকে।

এই রায়ের পর, মহামান্য আদালতের আদেশ অনুযায়ী উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে উপদেষ্টা কমিটির সভায় নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ৫ মে ২০২৪ তারিখে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়, যেখানে আমি মামলার পিটিশনার এবং যোগ্য প্রার্থী হিসেবে আবেদন করি। যথাযথ প্রক্রিয়ায় মন্ত্রণালয়ে প্যানেল প্রেরণ করা হলে, সরকার সন্তুষ্ট হয়ে আমাকে নিয়োগ প্রদান করে। অন্যদিকে, যারা জালিয়াতি করেছিল, তারা অযোগ্যতার কারণে নিয়োগ পায়নি এবং এখন অপপ্রচার চালাচ্ছে।

রমিজ কামালের জালিয়াতি প্যানেল বাতিল হওয়ায়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই নতুন প্যানেল গঠিত হয়েছে। এই প্যানেলে সাইমুন কামালসহ অনেকেই আবেদন করেছিলেন। এমনকি সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আবছারও তাঁর নিজস্ব প্যাডে সাইমন কামালকে নিয়োগের সুপারিশ করেন। অথচ সাইমুন কামাল মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে গোপনে প্যানেল নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। যদি প্যানেল গোপনে গঠিত হতো, তাহলে তিনি নিজেই কীভাবে আবেদন করলেন এবং চেয়ারম্যানের সুপারিশ নিলেন?

আরও উল্লেখযোগ্য যে, ১২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে মহামান্য আদালত রমিজ কামালের জালিয়াতি প্যানেল বাতিল করলেও, তিনি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তথ্য গোপন করে বর্তমান সরকারের কাছে ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ সালে বাতিলকৃত প্যানেলের ভিত্তিতে নিজের নিয়োগের জন্য লিখিত আবেদন করেছেন। এত বড় মাপের প্রতারক না হলে কেউ এমন কাজ করতে পারে না!

এই জালিয়াত চক্র ও তাদের দোসররা সরকারের ভালো কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং প্রশাসনকে বিব্রত করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ আমার নিয়োগ প্রক্রিয়া মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার আলোকে সম্পন্ন হয়েছে, যা বিজ্ঞপ্তিতেও উল্লেখ আছে। মনগড়া সংবাদ প্রচার করলে আদালত অবমাননার পাশাপাশি বিভিন্ন আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

আমি আবারও স্পষ্ট করে বলতে চাই, প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি এই সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমকে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রতিবাদকারি

কাজী মাওলানা মোহাম্মদ হোসাইন
সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত নিকাহ্ ও তালাক রেজিস্ট্রার, ঝিলংজা, সদর, কক্সবাজার